আসসালামুআলাইকুম। প্রিয় বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই। আশা রাখি আল্লাহর দয়ায় সবাই ভালো আছেন। কুরআন নাযিলের মাসে কুরআনের বিষয় আলোচনা করাই মূল ব্যাপার। প্রতিটি মুসলিমের উপর কুর আন শিক্ষা করা ফরজ। আপনি সাধারণ শিক্ষা, কারিগরী শিক্ষা, যে ক্ষেত্রেই পড়েন না কেন আপনাকে কুরআন শিখতেই হবে। তাই আসুন আমরা যারা কুরআন পড়তে জানি না তারা এই পোস্টে […]
ইবনু ওমর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘ইসলাম পাঁচটি স্তম্ভের উপরে প্রতিষ্ঠিত (১) তাওহীদ ও রিসালাতের সাক্ষ্য প্রদান করা এ মর্মে যে, আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ (ছাঃ) তাঁর বান্দা ও রাসূল (২) ছালাত কায়েম করা (৩) যাকাত প্রদান করা (৪) হজ্জ সম্পাদন করা ও (৫) রামাযানের ছিয়াম পালন করা’।[বুখারী ও মুসলিম]
আবূ হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, একদা রাসুলুল্লাহ (ছাঃ) আমাদের উদ্দেশ্যে ভাষণে বললেন, ‘হে জনগণ! তোমাদের উপর হজ্জ ফরয করা হয়েছে। অতএব তোমরা হজ্জ সম্পাদন কর। এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসূল! তা কি প্রতি বছর? তিনি নীরব থাকলেন এবং সে তিনবার কথাটি বলল। এরপর রাসুলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, আমি হ্যাঁ বললে তা ওয়াজিব হয়ে যাবে (প্রতি বছরের জন্য) অথচ তোমরা তা পালন করতে সক্ষম হবে না। তিনি পুনরায় বললেন, তোমরা আমাকে ততটুকু কথার উপর থাকতে দাও যতটুকু আমি তোমাদের জন্য বলি। কারণ তোমাদের পুর্বেকার লোকেরা তাদের অধিক প্রশ্নের কারণে এবং তাদের নবীদের সাথে বিরোধিতার কারণে ধ্বংস হয়েছে। অতএব আমি তোমাদের যখন কোন কিছু করার নির্দেশ দেই, তোমরা তা যথাসাধ্য পালন কর এবং যখন তোমাদের কোন কিছু করতে নিষেধ করি তখন তা পরিত্যাগ কর’।[মুসলিম] এ হাদীছটি স্পষ্টভাবে জীবনে একবার হজ্জ ফরয হওয়ার প্রমাণ বহন করে।
ইবনু আববাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, একদা আকরা‘ বিন হাবেস নবী করীম (ছাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! হজ্জ কি প্রতি বছর ফরয না জীবনে একবারই ফরয? তিনি বললেন, না বরং হজ্জ জীবনে একবার ফরয। যে অধিক করবে তা তার জন্য নফল হবে’।[আবুদাঊদ, ইবনু মাযহা, আহমদ]
কুরআনের আলোকে হজ্জের গুরুত্ব :
ছালাত, ছিয়াম ও যাকাতের মত হজ্জ পালন করা সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের উপর ফরয। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,وَلِلَّهِ عَلَى النَّاسِ حِجُّ الْبَيْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ إِلَيْهِ سَبِيلاً وَمَنْ كَفَرَ فَإِنَّ اللهَ غَنِيٌّ عَنِ الْعَالَمِينَ ‘আর আল্লাহর উদ্দেশ্যে এ গৃহের হজ্জ করা ঐ ব্যক্তির উপর ফরয করা হ’ল, যার এখানে আসার সামর্থ্য রয়েছে। আর যে ব্যক্তি তা অস্বীকার করে (সে জেনে রাখুক যে,) আল্লাহ জগদ্বাসী থেকে মুখাপেক্ষীহীন’ (আলে ইমরান ৩/৯৭)। এটিই হজ্জ ফরয হওয়ার মূল দলীল।[1] তিনি আরো বলেন,وَأَتِمُّوا الْحَجَّ وَالْعُمْرَةَ لِلَّهِ فَإِنْ أُحْصِرْتُمْ فَمَا اسْتَيْسَرَ مِنَ الْهَدْيِ ‘আর তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ্জ ও ওমরাহ পূর্ণ কর। কিন্তু যদি তোমরা বাধাপ্রাপ্ত হও, তাহ’লে যা সহজলভ্য হয়, তাই কুরবানী কর’ (বাক্বারাহ ২/১৯৬)। এ আয়াতটি হজ্জ ফরয হওয়ার পাশাপাশি ওমরাহ ফরয হওয়ারও দাবী রাখে, যে ব্যাপারে অধিকাংশ ছাহাবী ও ওলামায়ে কেরাম অভিমত ব্যক্ত করেছেন।[2] অন্যত্র তিনি বলেন,
‘আর তুমি মানুষের মাঝে হজ্জের ঘোষণা প্রচার করে দাও। তারা তোমার কাছে আসবে পায়ে হেঁটে এবং সকল প্রকার (পথশ্রান্ত) কৃশকায় উটের উপর সওয়ার হয়ে দূর-দূরান্ত হ’তে। যাতে তারা তাদের (দুনিয়া ও আখেরাতের) কল্যাণের জন্য সেখানে উপস্থিত হ’তে পারে এবং রিযিক হিসাবে তাদের দেওয়া গবাদিপশুসমূহ যবেহ করার সময় নির্দিষ্ট দিনগুলিতে তাদের উপর আল্লাহর নাম উচ্চারণ করতে পারে’ (হজ্জ ২২/২৭-২৮)। অত্র আয়াতসমূহে হজ্জ ফরয হওয়ার বিষয়টি সুস্পষ্টরূপে প্রতিভাত হয়েছে।
এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান
Comments 0